নবান্ন উৎসবকে ঘিরে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার পাঠানপাড়া বাজারে বসেছে জমজমাট মাছের মেলা। ভোরের আলো ফোটার আগেই বাজারে ভিড় জমাতে শুরু করেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। সারি সারি টঙে সাজানো দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির মাছ উৎসবের উচ্ছ্বাসে যোগ করেছে বাড়তি রঙ।
মেলায় দেখা গেছে বড় আকৃতির রুই, কাতলা, কালিবাউশ, মৃগেল, সিলভার কার্পসহ বিভিন্ন জাতের মাছ। দামও তুলনামূলক সহনীয় হওয়ায় কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর থেকে শুরু করে সাধারণ পরিবার—সবাই নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী পছন্দের মাছ বেছে নিচ্ছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, নবান্নের আনন্দে নতুন ধানের সঙ্গে বড় মাছ না হলে উৎসবের স্বাদই যেন অপূর্ণ থাকে।
স্থানীয়রা বলছেন, নবান্ন উৎসবের প্রাণই হলো এমন মাছের মেলা। এখানে ক্রয়-বিক্রয়ের পাশাপাশি জাগ্রত থাকে গ্রামীণ সংস্কৃতি ও উৎসবের ঐতিহ্য। ফলে স্থানীয় অর্থনীতিও হয়ে ওঠে আরও প্রাণচঞ্চল।
মেলায় মাছ কিনতে আসা ক্রেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, “নতুন ধানের আমেজে ক্ষির-পায়েসের সঙ্গে বড় মাছ না থাকলে নবান্নই মনে হয় পূর্ণ হয় না। তাই প্রতিবছরই এই মেলার অপেক্ষায় থাকি।”
অন্যদিকে বিক্রেতারা মোশাররফ বলেন , নবান্ন উপলক্ষে মাছের চাহিদা থাকে সব সময়ের চেয়ে বেশি। তাই বড় আকৃতির মানসম্মত মাছ নিয়ে এ মেলায় আসি। নবান্নে বেচাকেনা ভালো হয়। আমরা খুশি, ক্রেতা ও খুশি।
মাঠপর্যায়ে সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই পাঠানপাড়া বাজারে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। মাছ কেনাবেচার পাশাপাশি জমে উঠেছে গল্পগুজব, পরিচিতজনদের সঙ্গে দেখা হওয়ার আনন্দ—সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজ পুরো বাজারজুড়ে।
নবান্ন শুধু নতুন ধান ওঠার উৎসব নয়; গ্রামীণ সমাজে এটি মিলনমেলা, আনন্দ ও ঐতিহ্যের এক যৌথ প্রকাশ। আর এই পাঠানপাড়ার মাছের মেলায় সেই ঐতিহ্য যেন আরও রঙিন হয়ে উঠেছে।




Comments