Image description

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে শৈত্যপ্রবাহ শুরু না হলেও ঘন কুয়াশা, হিমেল বাতাস আর রাতভর শিশিরপাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে যমুনা নদীবেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

জানা গেছে, উপজেলার খাসরাজবাড়ী, নাটুয়ারপাড়া, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ ও মনসুর নগর এই ছয়টি ইউনিয়ন যমুনার বুকে অবস্থিত। এখানকার প্রায় ৩০টি চরে বসবাসকারী প্রায় দুই লাখ মানুষ এখন শীতে কাবু। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় সূর্যের দেখা না মেলায় কাজে যেতে পারছেন না শ্রমিকরা। উপার্জন কমে যাওয়ায় অনেক পরিবারে নেমে এসেছে অভাব-অনটন।

খাসরাজবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাইফুল ইসলাম বলেন, ‘চরাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়নে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ তীব্র শীতের কষ্টে আছেন। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। দুঃখের বিষয় হলো, এখন পর্যন্ত সরকারি সহায়তার অংশ হিসেবে একটি শীতবস্ত্রও বিতরণ করা সম্ভব হয়নি।’

এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। প্রতিদিন সর্দি, কাশি, জ্বর, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানান, পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় চরাঞ্চলের শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি অসুস্থ হচ্ছেন। শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত থাকলেও শীতে সুরক্ষার জন্য গরম কাপড় নিশ্চিত করা জরুরি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চরাঞ্চলে শীতের দাপট বাড়লেও এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোনো সাহায্য তাদের কাছে পৌঁছায়নি। চরবাসীর দাবি, দ্রুত যেন শীতার্ত মানুষের জন্য শীতবস্ত্র ও জরুরি ওষুধ সরবরাহের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন।