বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে যোগ দিতে বিশেষ ট্রেন বরাদ্দের দাবিতে লালমনিরহাটে ৭ ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ করে রাখেন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধের ফলে লালমনিরহাট স্টেশনে চরম অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিশেষ ট্রেন দেওয়ার মৌখিক আশ্বাস পেয়ে বিকেলে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঢাকা আগমন উপলক্ষে লালমনিরহাট থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা করে জেলা বিএনপি। এই যাত্রার জন্য ভাড়ার বিনিময়ে একটি বিশেষ ট্রেনের জন্য গত ১৯ ডিসেম্বর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়। ২৪ ডিসেম্বর রাতের জন্য একটি আন্তঃনগর ট্রেন বরাদ্দের প্রাথমিক আশ্বাস দেওয়া হলেও সোমবার রাতে রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, কোচ ও ইঞ্জিন সংকটের কারণে ট্রেন দেওয়া সম্ভব নয়।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার সকালে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা লালমনিরহাট রেলস্টেশনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা ঢাকাগামী আন্তঃনগর 'লালমনি এক্সপ্রেস' ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে রেললাইনে বসে ও শুয়ে পড়েন। এতে লালমনিরহাটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং স্টেশনের উভয় পাশে বেশ কয়েকটি ট্রেন আটকা পড়ে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জেলা যুবদল ও শ্রমিকদলের নেতারা অভিযোগ করেন, "আমরা আইনসম্মতভাবে ভাড়ার বিনিময়ে ট্রেন চেয়েছিলাম। তিন দিন ধরে টালবাহানা করে শেষ মুহূর্তে ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।"
রেলপথ অবরোধের কারণে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী এবং মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে ঢাকা অভিমুখে রওনা হওয়া যাত্রীরা আটকা পড়ে চরম বিপাকে পড়েন।
রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ডিআরএম (বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার) কুড়িগ্রাম সফরে থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন কর্মকর্তারা।
অবশেষে বিকেলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোচ ও ইঞ্জিন সংকটের মধ্যেও বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করার মৌখিক আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। বিকেল ৪টার দিকে নেতাকর্মীরা রেললাইন থেকে সরে দাঁড়ালে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় নিয়ে এবং জনভোগান্তি এড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কোচ ও ইঞ্জিনের সমন্বয় করে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর পরেই বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন।




Comments