Image description

| ছবি : মানবকণ্ঠ

মাদারীপুর পৌরসভায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে পৌরবাসীর। মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। যা পৌরবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। 

বুধবার (৮ অক্টোবর) সরেজমিনে মাদারীপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের পানিছত্র এলাকার শহীদ সূর্য সড়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস সরদার সড়কে ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে। গত মঙ্গলবারের মাত্র দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে সড়ক দুটি এবং এর আশপাশের এলাকা সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। এতে পানি নামতে না পারায় এখানকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন হাঁটু পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে, যা তাদের জন্য চরম বিড়ম্বনার সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয়রা বলছে, দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণই এই পরিস্থিতির প্রধান কারণ। বিদ্যমান ড্রেনগুলোও ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনে গুরুতর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কগুলো হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায় এবং অনেক বাসা-বাড়িতেও পানি ঢুকে পড়ে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদারীপুর পৌরসভা কর, ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যু সনদ এবং অন্যান্য রাজস্ব খাত থেকে প্রতি বছর শত কোটি টাকার বেশি আয় করে। অথচ, সেই তুলনায় ড্রেন পরিষ্কারের কাজ নিয়মিত হয় না এবং যত্রতত্র জলাশয় ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণের কারণেও এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলস্বরূপ যাত্রী, চালক ও পথচারীসহ সকল স্তরের মানুষ অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

পানিছত্র এলাকার পলি আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘এক ঘণ্টা বৃষ্টি হয়, আর সড়কে পানি থাকে দুই থেকে তিন দিন। জলাবদ্ধতার কারণে ভোগান্তির শেষ নেই। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।’

স্থায়ীয় ডা. অখিল সরকার বলেন, ‘আমি এই এলাকায় ১৫ বছর ধরে বসবাস করছি। গত দুই বছর ধরে দেখছি একটু বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে যায়। তাৎক্ষণিক পানি সরে যাওয়ার কোনো উপায় দেখছি না। হাঁটুপানিতে যাতায়াত করতে হচ্ছে। কবে এর থেকে মুক্তি মিলবে, সেটি বুঝতে পারছি না।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস সরদার সড়ক এলাকার পরাণ চক্রবর্তী মন্তব্য বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় এভাবে জলাবদ্ধতা মেনে নেওয়া যায় না। পৌর কর্তৃপক্ষের জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। আমরা ভোগান্তি থেকে মুক্তি চাই।’

মাদারীপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুল আলম সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আগের থেকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা বেশ উন্নত হয়েছে। বৃষ্টির পানি এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে সরে যাচ্ছে। এছাড়া দীর্ঘসময় যদি কোথাও পানি থাকে, তাহলে খবর পেলে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা দ্রুতই এর সমস্যা সমাধান করছে।’

উল্লেখ্য, ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ১৯৯১ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভার মর্যাদা প্রাপ্ত মাদারীপুর পৌরসভা প্রায় ১৪.৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এর ৯টি ওয়ার্ডের ৩৪টি মৌজায় প্রায় দুই লাখ মানুষের বসবাস।