
বড়লেখা পৌরসভার গাজীটেকা আইলাপুর এলাকার এগ্রো ও পোল্ট্রি ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুছ অভিযোগ করেছেন, কারাবন্দী সাইদুল ইসলাম জেলখানা থেকে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, প্রাণনাশ ও গুম করার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন। শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ তুলে প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নিরাপত্তার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে আব্দুল কুদ্দুছ জানান, সাইদুল ইসলাম গাজীটেকা আইলাপুর এলাকায় পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলে তদবির বাণিজ্য ও মাফিয়া কার্যক্রমের মাধ্যমে শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনেছেন। তার নেতৃত্বে শতাধিক সদস্যের একটি বাহিনী গড়ে ওঠে, যারা মিথ্যা মামলা, হামলা ও নির্যাতনের মাধ্যমে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আব্দুল কুদ্দুছের সঙ্গে সাইদুলের পারিবারিক বিরোধ মূলত তার বাড়ির পাশের একটি ভূমি জবরদখলের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে। এই বিরোধের জেরে সাইদুল তার বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা দায়ের করেছেন।
গত ২১ এপ্রিল আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অবৈধ টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে সাইদুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর বিভিন্ন ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেন, যার মধ্যে আব্দুল কুদ্দুছও একটি মামলা করেছেন, যা বর্তমানে বিচারাধীন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তদন্তে সাইদুলের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর ফাঁকির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে কারাবন্দী অবস্থায় সাইদুল তার চাচাতো ভাই নূরুল ইসলামের মাধ্যমে আব্দুল কুদ্দুছ ও তার পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চক্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ।
আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, “সাইদুলের বাহিনী যেকোনো সময় আমার প্রাণনাশ বা গুম করতে পারে। আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর সাইদুলের পরিবার একটি সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে তিনি নাকি সাইদুলের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা দায়ের করেছেন এবং তাকে কারাগারে আটক রাখতে একের পর এক মামলা দিচ্ছেন। আব্দুল কুদ্দুছ এই দাবিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ও নিরাপত্তা বিষয়ক সহ-সম্পাদক আব্দুন নুর তালুকদার বক্তব্য দেন। এছাড়া ভুক্তভোগীদের মধ্যে রিয়াজ উদ্দিন, রফিক উদ্দিন, সমছ উদ্দিন ও আজিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আব্দুল কুদ্দুছ প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
Comments