
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় ১৫৯টি দুর্গাপূজা মণ্ডপে আনসার সদস্য নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা আয়শা সুলতানা ও ইউনিয়ন কমান্ডারদের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়, প্রশিক্ষণবিহীন ব্যক্তিদের অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম করা হচ্ছে। গত বছরও একই ধরনের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কর্মকর্তা আয়শা সুলতানা এখনও দায়িত্বে রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আনসার সদস্য জানান, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ১৫৯টি পূজা মণ্ডপে মোট ৯৬৬ জন আনসার সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫০ জন পুরুষ এবং ৩১৬ জন মহিলা। গুরুত্বপূর্ণ ৯টি মণ্ডপে প্রতিটিতে ৮ জন এবং বাকি ১৫০টি মণ্ডপে প্রতিটিতে ৬ জন আনসার সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা আয়শা সুলতানার নির্দেশে ইউনিয়ন কমান্ডাররা প্রতিজন আনসার সদস্যের কাছ থেকে অনলাইন ও কাগজপত্র ঠিক করার জন্য ৬০০ টাকা করে আদায় করছেন। এছাড়া, প্রশিক্ষণবিহীন ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১,০০০ থেকে ১,৫০০ টাকা নিয়ে তাদের মণ্ডপে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
অধিকাংশ মণ্ডপে ৬ জন আনসার সদস্যের পরিবর্তে ৪ থেকে ৫ জন উপস্থিত থাকছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মণ্ডপের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, গত বছরও ৬ জনের জায়গায় ৪ জন দায়িত্ব পালন করলেও সিসি (সার্টিফিকেট) তৈরিতে ৬ জনের নামে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছিল। এ বছরও একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা আয়শা সুলতানা বলেন, “কেউ যদি নিয়োগে টাকা নিয়ে থাকে, তথ্য দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ পূজা মণ্ডপে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।”
জেলা আনসার-ভিডিপি পরিচালক মো. আব্দুস সামাদ বলেন, “পূজা মণ্ডপে আনসার সদস্য নিয়োগে কোনো অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখন বনিক বলেন, “প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনো আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। অর্থ নিয়ে নিয়োগ বা ৬ জনের জায়গায় ৪-৫ জন দায়িত্ব পালন করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
Comments