Image description

ঢাকার ধামরাইয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের গাছ জব্দ করার ঘটনায় উপজেলা বন কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, শাসানো  ও ‘খেয়ে ফেলার হুমকি’ দিয়েছেন বিএনপির এক নেতা। ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে ওই নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তখনও বন কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও বদলির হুমকি দেন ওই নেতা।

একজন সরকারি কর্মকর্তাকে তার দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া এবং প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে। বিএনপির কিছু নেতাকর্মীর এমন আচরণে প্রশ্ন উঠেছে তাদের দায়িত্বশীলতা নিয়ে। ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে পরবর্তীতে কি হবে সাধারণ জনগণের নিকট এমন প্রশ্ন। 

বন কর্মকর্তাকে খেয়ে ফেলার হুমকি দেওয়া অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ধামরাই উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক  সভাপতি  বাবুল হোসেন। একটি গাছ জব্দ করার জন্য একজন সরকারি কর্মকর্তাকে এভাবে গালিগালাজ করতে পারেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সময় আমরা যা বলবো তাই করতে হবে। 

অপরদিকে ভুক্তভোগী ওই বন কর্মকর্তা হলেন ধামরাই উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান হোসেন।

জানা যায়, উপজেলার কালামপুর-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের কাঠালিয়া এলাকায় বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই একটি বড় আকারের জামগাছ কেটে বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করে রাখেন স্থানীয় মুদি দোকানদার মিজানুর রহমান। এর পূর্বেও তিনি কয়েকটি গাছ কেটে নিয়েছেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে বন কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় ত্রিশ হাজার টাকার জাম গাছটি জব্দ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহীন আলমের জিম্মায় রেখে আসেন। এ ঘটনার পরই ক্ষুব্ধ হয়ে মিজানুর রহমানের পক্ষে সাবেক ইউপি সদস্য ও কুশুরা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো: বাবুল হোসেন ফোনে বন কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্য শাহীন আলম কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বিভিন্নভাবে হুমকি দেন।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে বিএনপির ওই নেতা বাবুল হোসেনের সঙ্গে কথা বললে, তিনি বন কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “ও জানে না এ এলাকায় কারা থাকে! ওরে একদম খেয়ে ফেলবো! আমার বোনের জামাই ফরেস্ট অফিসার। ওর মতো কর্মকর্তাকে ধামরাইয়ে থাকতে দিবো না। এখন আর আওয়ামী লীগ নাই। যখন তখন ওর মতো কর্মকর্তাকে বদলি করে দিবো। 

একজন সরকারি কর্মকর্তার সাথে কেন এভাবে কথা বলছেন বললে তিনি জানান, এখন আমরাই সব। ওর মতো কর্মকর্তাকে খেয়ে ফেলবো।

এ বিষয়ে উপজেলা বন কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ জব্দ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জিম্মায় রাখা হয়। পরে ওই ওয়ার্ডের বিএনপির সাবেক সভাপতি বাবুল হোসেন আমাকে এবং ইউপি সদস্য শাহীনকে গালিগালাজ ও হুমকি দেন। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্যারকে অবহিত করেছি।” 

সরকারি কর্মকর্তাকে বদলি, খেয়ে ফেলার হুমকি দেওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা৷ সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান৷গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন মিজানুর রহমান। নিজের ঘর ঠিক করা হবে বলে গাছ কেটেছি। 

সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা হতে গাছ কাটার কারণে গাছের সমতূল্য অর্থ আদায় বা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দিয়েছেন বন কর্মকর্তা৷ 

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামনুন আহমেদ অনীক ট্রেনিংয়ে থাকায় বার বার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি৷