Image description

ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়ন ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনসহ ৫ দফা দাবিতে ভোলার বোরহানউদ্দিনে অবস্থিত ২২৫ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘেরাও করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। দিনভর কর্মসূচির পর কোনো আশ্বাস না পেয়ে সোমবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। এতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সোমবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে লংমার্চ করে হাজারো আন্দোলনকারী প্রথমে বোরহানউদ্দিন সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজ মাঠে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে কুতুবা ইউনিয়নের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্ট ঘেরাও করতে রওনা হন। প্লান্টের প্রবেশমুখে পুলিশ বাধা দিলে সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘দাবি মোদের একটাই, ভোলা-বরিশাল সেতু চাই’, ‘সরকারি মেডিকেল কলেজ ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চাই’—এমন নানা স্লোগান দেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দাবি মানা না হলে ভোলার গ্যাস দিয়ে জাতীয় গ্রিডের চাহিদা পূরণ করতে দেওয়া হবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রনজিত কুমার দাস, ওসি ছিদ্দিকুর রহমানসহ র‍্যাব ও নৌবাহিনীর বিশেষ টিম অবস্থান নেয়।

দুপুর ৩টায় আন্দোলনকারীরা আল্টিমেটাম দিয়ে জানান, এক ঘণ্টার মধ্যে দাবির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। কোনো আশ্বাস না মেলায় সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে তারা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, ভোলা জেলা শহর ও বোরহানউদ্দিন পৌর এলাকায় আবাসিক গ্যাস সংযোগ দেওয়ার জন্য ৫ বছর আগে লাইন স্থাপন করা হলেও এখনো সংযোগ দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। সম্প্রতি উপদেষ্টারা আবাসিক গ্যাস সংযোগ ও এই মুহূর্তে সেতু নির্মাণ সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

বোরহানউদ্দিনের দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। আন্দোলনকারীরা জানান, ৫ দফা দাবি পূরণ না হলে ভোলা থেকে ঢাকায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

‘আমরা ভোলাবাসী’ ব্যানারে আয়োজিত এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভোলা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, সদস্য সচিব রাইসুল আলম, দক্ষিণাঞ্চলের নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি মোবাশ্বের উল্লাহ চৌধুরী ও সদস্য সচিব মোশারফ হোসেন। এছাড়া সোমবারের কর্মসূচিতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।

আন্দোলনকারীরা ঘোষণা করেছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আগামীকাল (মঙ্গলবার) উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘেরাও কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে