বরিশালে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে সমাবেশ ও মাথাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে এ কর্মসূচি শুরু হয়। সমাবেশ শেষে মিছিলটি অশ্বিনী কুমার হল চত্বর থেকে শুরু হয়ে ফজলুল হক এভিনিউ, চকবাজার, লাইন রোড হয়ে পুনরায় একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন (জিএসএ) বরিশাল জেলা সমন্বয়কারী ও বরিশাল-৫ আসনের মনোনীত প্রার্থী দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু।
বক্তব্য দেন, সংগঠনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আরিফুর রহমান মিরাজ, সহ নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হোসেন মারুফ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিবুল ইসলাম সাফিন ও রুবিনা ইয়াসমিনসহ অন্য নেতৃবৃন্দ। এসময় নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থার কাঠামোর মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। দেশের জন্য একটি নতুন ‘জাতীয় সনদ’ ও ‘গণতান্ত্রিক ক্ষমতা–কাঠামো’ প্রয়োজন। তিনি বলেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কারণেই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। ছাত্র ফেডারেশনের শাকিলসহ বহু আন্দোলনকারীর আত্মত্যাগ তার সাক্ষ্য বহন করে।
তিনি আরও জানান, গত এক বছরে গণসংহতি আন্দোলন ‘রাষ্ট্র সংস্কারের কর্মসূচি’ নিয়ে কাজ করেছে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই সনদের ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কার ও সংসদকে সংশোধনের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি সামনে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে সংবিধান সভার নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন—একসাথে অনুষ্ঠিত হওয়ার দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের শ্রমিক, কৃষক, খেটে–খাওয়া মানুষের ন্যায্য অধিকার এখনও প্রতিষ্ঠা পায়নি। তাই এমন প্রতিনিধিদের সংসদে পাঠাতে হবে, যারা সত্যিকার অর্থে জনগণের দাবি তুলে ধরতে পারে। তারা বলেন, গণসংহতি আন্দোলন সবসময় জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে রাজনীতি করে।
নেতাদের বক্তব্যে উঠে আসে, ধর্ম, জাতীয়তা ও লিঙ্গভেদে দেশের কোনো নাগরিকের মর্যাদা হানি করা যাবে না। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক সমান মর্যাদা ও অধিকার পাওয়ার যোগ্য। আগামী দিনের সরকার হতে হবে “জনমানুষের সরকার”।
বক্তারা অভিযোগ করেন, বিগত শাসনামলগুলোর বঞ্চনা, বৈষম্য, ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও দলবাজির কারণে দেশের মানুষ লাভবান হয়নি। জনগণ পরিশ্রম করে সম্পদ সৃষ্টি করলেও তার ন্যায্য অংশ পায় না। শুধুমাত্র ভোট দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয় না বলেও মন্তব্য করেন তারা।
নেতৃবৃন্দ প্রতিশ্রুতি দেন—রাষ্ট্রের বিদ্যমান কাঠামো ভেঙে জনগণকে রাষ্ট্রক্ষমতার মূল উৎসে পরিণত করাই তাদের লক্ষ্য। তারা বলেন, “গণতন্ত্র মানে শাসকের ইচ্ছা নয়; গণতন্ত্র মানে মানুষের মুক্ত সিদ্ধান্ত।” শেষে মাথাল মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়।




Comments