জামালগঞ্জে অর্ধ সহস্রাধিক যুবক শীতকালে শুরু করেছে সিদ্ধ ডিমের ব্যবসা
জামালগঞ্জ উপজেলা জুড়ে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। শীতে নানা ধরনের পিঠা বিক্রির পাশাপাশি সিদ্ধ ডিমের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুন। শীতে লেয়ার মুরগির ডিমের পাশাপাশি ক্রেতাদের কাছে দেশি হাঁস-মুরগির ডিমের স্বাদ বেশি। উপজেলা সদর, সাচনা বাজার, হারুন মার্কেট, মন্নানঘাট বাজার সহ বিভিন্ন হাট-বাজার ছাড়াও রাস্তার মুড়ে মুড়ে বিক্রি হচ্ছে সিদ্ধ ডিম।
এদিকে বাড়তি আয়ের আশায় এই পেশায় যুক্ত হয়েছে শিক্ষার্থী, যুবক, বৃদ্ধ সহ অনেকেই। তাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, লেয়ার মুরগির ডিম স্থানীয় ফার্ম কিংবা বাজার থেকে ক্রয় করেন ৫০ টাকা হালি। বিক্রি করেন ৮০ টাকা হালি। এতে প্রতি ১ হালি ডিমে লাভ হচ্ছে ৩০ টাকা।
অপর দিকে দেশিও হাসের ডিম ৬০ দরে ফার্ম থেকে সংগ্রহ করে সেগুলো সিদ্ধ করে বিক্রয় করছে ১০০ টাকা হালি। এতে লাভ হচ্ছে প্রতি হালিতে ৪০ টাকা। ডিম বিক্রেতাদের মাঝে অনেকেই শিক্ষার্থী, দিনমজুর, বৃদ্ধ ও বেকার যুবক রয়েছে। তারা শীতকালে বাড়তি আয়ের আশায় বিকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত সিদ্ধ ডিম বিক্রি করছে অর্ধ সহস্রাধিক মানুষ।
উপজেলার সাচনা বাজারে ফেরিঘাটে সিদ্ধ ডিম বিক্রেতা ছাত্র রাহিম উদ্দিন বলেন, শীত শুরুর সাথে সাথে প্রতিদিন ফেরিঘাটে সিদ্ধ ডিম বিক্রি করেন সে। শীতে ডিমের চাহিদা বেড়েছে, যার কারণে বিক্রিও ভাল হচ্ছে। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ হালি ডিম বিক্রি করতে পারে সে। এতে প্রায় ৬ শত থেকে ৭ শত টাকা লাভ হয় তার।
জামালগঞ্জ বাজারে দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামের আসাদ উল্লাহ জানান, প্রতিদিন জামালগঞ্জ বাজারে সিদ্ধ ডিম বিক্রি করে সে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হালি ডিম বিক্রি করতে পারে। হাসের ডিম সবাই পছন্দ করে। তাই বয়লার মুরগির ডিম কম চলে। আশেপাশের ফার্ম থেকে ৬০ টাকা হালি ডিম সংগ্রহ করে প্রতি পিস ২৫ টাকা দরে বিক্রি করেন। সাথে ধনিয়াপাতা, লবণ, কাচা মরিচ বেটে ডিমের মাঝখানে ফাক করে দেন। এতে করে লোক বেশি করে তার দোকানে ডিম খেতে আসে।
সাচনা বাজারে ডিম বিক্রেতা বয়োবৃদ্ধ সামাদ মিয়া বলেন, হাড়িতে করে প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ ডিম বিক্রি করেন। তিনি বলেন, শীতের কারণে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। তিনি ১০ বছর যাবৎ সিদ্ধ ডিম বিক্রি করেন। কয়েক বছর আগেও হাতেগুনা কিছু লোক ডিম বিক্রি করতাম। এখন শত শত লোক এই পেশায় চলে এসেছে। তার পরেও ডিম বিক্রয় কম হয় না। আগের চেয়ে ডিম বিক্রয় বেড়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আব্দুল বাতেন বলেন, শীত এলেই অনেকে সিদ্ধ ডিম খেয়ে থাকেন। সিদ্ধ ডিমের মাঝে নানা ধরনের উপকারিতা রয়েছে। নিয়মিত ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। লেয়ার মুরগির ডিমের চেয়ে দেশি হাঁস-মুরগি ডিমে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। সিদ্ধ ডিম খেলে শরীরে বাড়তি ক্যালরি যোগ হয়। তবে অনেকে বিট লবণ দিয়ে সিদ্ধ ডিম খেয়ে থাকেন। সেই বিট লবণ মুখরোচক হলেও শরীরের জন্য উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়। যার কারণে বিট লবণ পরিহার করা উচিত।




Comments