জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই চুয়াডাঙ্গা জুড়ে বইতে শুরু করেছে উৎসবের আমেজ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে এই ঘোষণা সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটার সবার মাঝেই দেখা গেছে নির্বাচনি উচ্ছ্বাস।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তফসিল ঘোষণার পরপরই নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি প্রতিপালনে সক্রিয় হয়েছে জেলা প্রশাসন। শহরের সব বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনার পর অনেক সম্ভাব্য প্রার্থীকে নিজ উদ্যোগে এবং কর্মীদের সহায়তায় প্রচার সামগ্রী অপসারণ করতে দেখা গেছে।
তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন দলীয় কার্যালয়ে, বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতপন্থী নেতাকর্মীদের আলোর মশাল জ্বালিয়ে আনন্দ উল্লাস করতে দেখা যায়। গ্রাম থেকে শহর সর্বত্রই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ নির্বাচন। চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
নতুন ভোটার ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উদ্দীপনা একটু বেশি। সদর উপজেলার তরুণ ভোটার আশিকুর রহমান শান্ত বলেন, ‘এই প্রথম আমি জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেব। তফসিল ঘোষণার পর মনে হচ্ছে সব সংশয় কেটে গেছে। আমাদের মতো তরুণেরা ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’
সরোজগঞ্জের চা দোকানি সুমন হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন এলেই উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। এ সময় আমাদের ব্যবসাও জমে ওঠে, চায়ের কাপে চলে রাজনৈতিক ঝড়। তফসিল ঘোষণায় আমরা খুশি।’
রাজনৈতিক নেতারাও আশবাদী একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে। জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম বলেন, ‘দীর্ঘদিন মানুষ নির্বাচনের স্বাদ পায়নি। তফসিল ঘোষণার পর মানুষের মনে আনন্দ বিরাজ করছে। এবার একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে আশা করি।’
জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাগর আহমেদ বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর চুয়াডাঙ্গায় উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণের মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।’
সদর উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মতিউর রহমান মিশর বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছর ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত মানুষ এবার তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত হলে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।’
তবে কিছুটা সংশয় প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আসলাম হোসেন অর্ক। তিনি বলেন, ‘মানুষের অধিকার ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে আন্দোলন হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পরও কিছু সংশয় রয়ে গেছে যে, মানুষ কি শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারবে?’
সব সংশয় কাটিয়ে চুয়াডাঙ্গাবাসী এখন একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর নির্বাচনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন।




Comments