Image description

বাংলাদেশের ফলচাষ এখন ধীরে ধীরে নতুন দিগন্তে প্রবেশ করছে। একসময় যেখানে ধান ও গমই ছিল কৃষকের মূল ভরসা, সেখানে এখন ফলজ ও উচ্চমূল্যের ফসল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে। বাংলাদেশের তরুণ কৃষকদের হাতে এখন কৃষি পেশা নতুন সম্ভাবনার গল্প লিখছে। কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের যুবক আশরাফুল আলম আনন্দ সেই পরিবর্তনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি প্রথমবারের মতো মাত্র দুই বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করে পেয়েছেন চমকপ্রদ সাফল্য—ফলনের প্রথম বছরে আয় করেছেন প্রায় এক লাখ টাকার বেশি। বছর দুয়েক আগে পরিবারের লোকজনের উৎসাহে দুই বিঘা জমিতে বারী-১ দেশি জাত ও আফ্রিকান জাতের সাড়ে ৩৫০টি মাল্টা গাছের চারা ও ১০০টি দার্জিলিং জাতের কমলা চারা রোপণ করেন। আনন্দের মাল্টা বাগান দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছেন এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীরা, অনেকেই তার বাগান দেখে মালটা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন, নিচ্ছেন তার কাছে প্রয়োজনীয় পরামর্শ।

আনন্দের মালটা বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, বাড়ির পাশে মাল্টা বাগান দেখতে এসেছি, ঘুরে ফিরে দেখলাম, সেই সঙ্গে মাল্টাও খেলাম, আনন্দ ভাইয়ের মালটা বাগানের মাল্টা খুবই রসালো ও মিষ্টি। প্রথমবারের মতো প্রচুর ফল এসেছে। ইতিমধ্যে তিনি এক লক্ষ টাকার বিক্রি করেছেন।

সফল মালটা চাষী যুবক আশরাফুল আলম আনন্দ জানান, পরিবারের উৎসাহ থেকে মাল্টা চাষ শুরু করি। প্রথমে ভয় ছিল ফলন কেমন হবে, কিন্তু এখন গাছভর্তি মাল্টা দেখে মনে হচ্ছে পরিশ্রম সফল হয়েছে। ইতিমধ্যে আমি আমার মালটা বাগান থেকে মাল্টা এক লক্ষ টাকা বিক্রি করেছি। আমার বাগানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে, ঘুরে দেখছেন এবং মালটা চাষের পরামর্শ নিচ্ছেন।

আশরাফুল আলম আনন্দের মতো তরুণ উদ্যোক্তারা প্রমাণ করছেন পরিশ্রম, সঠিক পরিকল্পনা ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করলে বাংলাদেশের মাটিতে ফলতে পারে সোনার ফসল। মাল্টা চাষ শুধু অর্থনৈতিক লাভই দিচ্ছে না, বদলে দিচ্ছে গ্রামের কৃষি অর্থনীতির চিত্রও।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার রাফিকা আক্তার জানান, আশরাফুল আলম আনন্দ একজন সফল মালটা চাষী, তার মালটা বাগান দেখে কৃষকরা মাল্টা চাষে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। তিনি যদি কোনো ধরনের পরামর্শ চান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তাকে যেকোনো ধরনের পরামর্শ দিতে সদা প্রস্তুত রয়েছে।